প্রকাশভঙ্গীর ভিন্নতা সত্ত্বেও সকল হাদিস অস্বীকারকারীর মধ্যেই বিভিন্ন মাত্রায় এই বৈশিষ্ট্যগুলো পরিলক্ষিত হয়-
১) তারা হয় বলবে – সহিহ ও জাল বর্ণনার মাঝে পার্থক্য করা অসম্ভব, অথবা তারা বলবে হাদীস শাস্ত্রের দ্বারা কোন বর্ণনার সাহিহ হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব না। তাদের এই সংশয়ের উৎস হল হাদিস শাস্ত্র ও হাদীসের তাহক্বিকের পদ্ধতির ব্যাপারে তাদের অজ্ঞতা অথবা এ শাস্ত্রের সঠিক মূল্যায়নে তাদের ব্যর্থতা।
২) তারা পূর্ববর্তী মুহাদ্দিসিন ও মুহাক্কিকগণের ইজমা অর্থাৎ সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত মতকে গ্রহন করে না। যেমন সাহিহ আল বুখারি ও সাহিহ মুসলিমের ব্যাপার ইমাম আন-নাওয়াউয়ি রাহিমাহুল্লাহ মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থের ভূমিকাতে (১/১৪) বলেছেনঃ
"এ ব্যাপারে আলিমগণ একমত যে, কুরআনের পর সর্বাধিক নির্ভুল ও উম্মাহর কাছে গ্রহণযোগ্য কিতাব হল সাহিহ আল-বুখারি ও সাহিহ মুসলিম। আর এ দুটির মাঝে আল বুখারির কিতাব হল অধিকতর নির্ভরযোগ্য ও উপকারী।"
৩) তারা ঔদ্ধত্য ও দম্ভভরে, আক্রমনাত্মকভাবে প্রচার করে যে, সালাফ আস-সালেহিনগণ অর্থাৎ ইসলামের প্রথম তিন প্রজন্ম যেভাবে কুরআনকে বুঝেছেন কুরআনের ব্যাখ্যা তার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। বরং সমসাময়িক চিন্তাভাবনা, নৈতিকতা ও দর্শনের সাথে তাল মিলিয়ে যুগে যুগে নতুন ভাবে কুরআনকে ব্যাখ্যা করা উচিৎ।
৪) আল্লাহর কিতাবের নবউদ্ভাবিত ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য এক নতুন সামাজিক ও ধর্মীয় কাঠামো প্রবর্তনের লক্ষ্য তারা পোষণ করে। দ্বীনের ব্যাপারে মুসলিমদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবার জন্য এবং যেভাবে মুসলিম উম্মাহ ইসলামের শুরু থেকে এই দ্বীনকে বুঝে এসেছে তা বদলে দেবার জন্য তারা একটি ইসলামি রেনেসার শুরু করতে চায়।[1]
একারনে প্রায়ই আমরা দেখি ইসলামের সুপ্রতিষ্ঠিত ও সর্বসম্মত কোন বিষয়ের ব্যাপারে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক বিভিন্ন বাতিল ব্যাখ্যা দেয়ার সাথে হাদিস অস্বীকারকারীদের নাম সংযুক্ত।
[1] অথবা তারা একে শারীয়াহ সংস্কার/শারীয়াহ পুনঃব্যাখ্য/শারীয়াহ নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা[Shariah Reform, Re-interpretation of Shariah, Epistemological Change in persprective towards Sharia – “Moderate Modern Islam”]– বলে অভিহিত করে