আমেরিকায় কৌফম্যান ফাউন্ডেশন নামে একটা প্রতিষ্ঠান আছে। এরা প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে দু-বছরের একটা কোর্স করায়। কোর্স ফী ৭২ হাজার ডলারের আশেপাশে। প্রায় ৬১ লাখ টাকা। এই আকাশচুম্বী ফী সত্ত্বেও অনেকে এই কোর্সগুলো করে। অনেক মুসলিমও করে। এত টাকা, এত সময় শুধু একটা প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সের জন্য।
বলুন তো, উম্মাহর প্রজেক্ট, সমগ্র মানজাতির মুক্তি ও আখিরাতের নিরাপত্তার জন্য যে প্রকল্প তার জন্য কতটুকু সময়, শ্রম আর অর্থ ব্যয় করা উচিত?
যে প্রজেক্টের উদ্দেশ্য উম্মাহর পুনর্জাগরণ, মানবজাতির মাঝে নিজেদের অগ্রবর্তী ভূমিকা খুঁজে নেয়া, যে প্রজেক্টের উদ্দেশ্য আল্লাহর যমিনে তাঁর দ্বীনের প্রতিষ্ঠা করা এবং এর মাধ্যমে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে কল্যাণ ও বরকতময় করা—তাঁর জন্য আমরা কতটুকু সময় দিচ্ছি?
‘আমাদের ধর্ম সব দিক বিবেচনা করে’, ‘ইসলাম এত কঠিন না’, ‘ইসলাম যুক্তিসম্মত’, ‘ইসলাম সব যুগে প্রযোজ্য’, এ ধরনের অনেক কথাই তো আমরা বলি। কিন্তু এসব কথা দিয়ে আমরা আসলে কী বোঝাতে চাই? আমরা কি এ কথাগুলো বলে নিজেদের গাফেলতিকে জায়েজ করি? নিজেদের সান্ত্বনা দিই?
বিজয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ আমাদের নবী ﷺ গ্রহণ করেছিলেন। পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম, ব্যালেন্স, অগ্রাধিকার ঠিক করা, প্রতিপক্ষের ওপর আদর্শিক আক্রমণ, ভালো নিয়্যাত, বিশ্বাসীদের উদ্বুদ্ধ করা—কোনো কিছু তিনি বাদ রাখেননি।
আমরা কী করছি?
আমার ভাইয়েরা, একটা ছোট্ট হিসেব করে দেখুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট/ফুটবল কিংবা অন্য কোনো খেলার পেছনে আমি মাসে কত সময় খরচ করেছি?
১০ ঘণ্টা? ২০ ঘণ্টা? ৩০ ঘণ্টা? ৫০ ঘণ্টা?
ঠিক আছে। কুরআনে আল্লাহ যে প্রতিযোগিতার কথা বলেছেন, তার পেছনে আমি কতটুকু সময় দিয়েছি? আমার কতটুকু সময় দেয়া উচিত?
একবার নিজের সাথে সৎ হয়ে এ প্রশ্নের উত্তর খুজুন…
‘আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’ [তরজমা, সূরা আলে-ইমরান, ১৩৩]
আসুন, আমরা এই অভিযাত্রায় একসাথে শামিল হই, ইলম, দাওয়াত এবং কাজের মাধ্যমে।
ড. ইয়াদ কুনাইবী হাফিযাহুল্লাহ
#আয়নাঘর বই থেকে