বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে ভিডিও দেখে আমিও মোটিভেইটেড হলাম বাংলাদেশের অগ্রগতির কিছু ‘সিম্পটম’ তুলে ধরতে। আসলে আপনার মাইন্ডসেট নির্ভর করবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলুন, দেখবেন দুনিয়াও বদলে গেছে। চেনা পৃথিবীটা আরো সুন্দর, আরো প্রিয় হয়ে উঠছে।
আজ থেকে ১০ বছর আগে ইয়াবার দাম ছিল ৫০০-৬০০ টাকা। এখন দাম কমে হয়েছে ১৬০-২৫০ টাকা। অর্থাৎ দশ বছরে দাম কমেছে পঞ্চাশ পার্সেন্টের বেশি। যারা মূল্যস্ফীতি নিয়ে হাহুতাশ করে তারা কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টটি এড়িয়ে যান। আমরা কিন্তু বলতে পারি ইয়াবার দাম কমা থেকে দ্রব্যমূল্য কমার প্রমান পাওয়া যায়।
দেশে আত্মহত্যা বাড়ছে। একটু খুজলেই দেখবেন উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে আত্মহত্যার হার বেশি হয়, যেমন ফিনল্যান্ড, জাপান ইত্যাদি। এ দিক থেকে আত্মহত্যার বর্তমান উচ্চহার হল বাংলাদেশের ফিনল্যান্ড কিংবা জাপান হবার যাত্রায় আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা যায়।
বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী এ বছর জুলাই পর্যন্ত পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে ২০০ এর ওপরে মানুষ। চাইলে এখানে মানবাধিকার, ডিউ প্রসেস এসব নিয়ে তর্ক করা যায়। কিন্তু ব্যাপারটা একটু অন্য ভাবে দেখুন, ২০০ জনের বেশি লোক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবার অর্থ এতো লোকের বন্দুক কিনে যুদ্ধ যাবার সামর্থ্য তৈরি হয়েছে। এটা কিন্তু আগে ছিল না।
ব্যাংক খাত থেকে টাকা লুট হচ্ছে, বিদেশে চলে যাচ্ছে – এমন অনেক কথাই শুনেছেন। চার ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমান প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও রিযার্ভ চুরি হচ্ছে। আমরা সবাই এই নেগেটিভ দিকগুলোতে ফোকাস করছি। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো, চোর কিংবা ডাকাত কি কখনো গরীবের বাসায় হানা দেয়? মাছি কিন্তু ঐ ফুলের কাছে যায় যাতে মধু আছে। ব্যাংক থেকে এতো টাকা গুম আগে হয়নি। তার মানে এখন আমরা আগের চেয়ে অনেক ধনী হয়েছি।
মালায়শিয়ায় সেকন্ড হোম গড়ায় লিস্টে তিন নাম্বারে আছে বাংলাদেশ। প্রথম আর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চীন ও জাপান। এথেকেই বোঝা যায় উন্নয়নে আমরা চীন ও জাপানের ঠিক পরেই আছি, আর কিছুদিনের মধ্যেই আমরা হয়তো জাপানকে ছাড়িয়েও যেতে পারবো।
গর্ভপাতের সংখ্যা বাড়ছে। এর বিশাল অংশ হচ্ছে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে যেখানে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ খরচ থাকছে। এছাড়া গর্ভপাত পর্যন্ত এসে পৌছানোর আগের পর্যায়েও হোটেল ভাড়া জাতীয় বিভিন্ন খরচাখরচ থাকে। এসব খরচ শেষেই কিন্তু গর্ভপাত হচ্ছে। এ থেকেও বোঝা যায় মানুষের বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের টাকা বেড়েছে।
আগে প্রেমে ব্যার্থ হলে লোকজন এসিড মারতো। এখন কিন্তু এসিড মারার বদলে আসল-নকল ছবি নেটে ছেড়ে দেয়। প্রথমত, এটা দেশের মানুষের মনোভাবে একটা ইতিবাচক পরিবর্তনের আভাস দেয়। মানুষ এখন আর সহিংস হচ্ছে না। এটা অবশ্যই অগ্রগতি। অন্যদিকে দেখুন এসিড কেনার ব্যাপারটা অ্যানালগ, কিন্তু ছবি ফটোশপ করা কিংবা আসল ছবি তোলা, বা ভিডিও রেকর্ড করা, তারপর নেটে আপলোড করা – এগুলোর জন্য কম্পিউটার লিটারেসি প্রয়োজন। তাই এদিকে দিয়েও আমরা কিন্তু এগিয়ে গেছি।
আগে বাংলাদেশে ছিল দিলদার, টেলি সামাদ। কেউ টাকা খরচ করে আলাদা করে দিলদারের কাছে কথা শুনতে যেতো না, কিন্তু এখন মানুষ সুলাইমান সুখনদের কথা শুনতে যায়। এর ওপর দিয়ে সে একটা ক্যারিয়ার বানিয়ে ফেলেছে। এটাও প্রমান করে যে মানুষের হাতে টাকা বেড়েছে, খরচ করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা নিয়ে আমরা অনেক হাসাহাসি করি। কিন্তু ভেবে দেখেছেন, আগে বাংলাদেশে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা হতো না। এখন হচ্ছে? কেন? কারণ আমাদের ঐ পরিমাণ উন্নতি হয়েছে।
আগে নির্বাচনী প্রচারনায় মমতাজের গান চলতো এখনো হিপহপের মাধ্যমে ভোট চাওয়া হয়। উন্নয়ন ও অগ্রগতির এতো স্পষ্ট একটা প্রমান উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই।
প্রায়ই আমরা খবরে দেখি খাবার দোকানগুলোতে কুকুর-বিড়ালের বিরিয়ানি বানানো হচ্ছে। আমরা এটা নিয়ে সমালোচনা করি। কিন্তু আমরা ভেবে দেখি না যে, যেখানে আগে মানুষ খেতে পারছিল না, সেখানে তারা এখন বিরিয়ানি খাচ্ছে, হোক না সে কুকুরের গোশতের। বিরিয়ানি তো বিরিয়ানি-ই।
আগে আমাদের কক্সবাজারে বিশ্বমানের ম্যারিন সিটি শপিং কমপ্লেক্স ছিল না। এটা আমরা কেউ চিন্তা করছি না। আমরা ভাবছি না যে জায়গায় আগে অজ-পাড়াগাঁ ছিল সেখানে যদি ম্যারিন সিটির মতো সব কিছু খুঁজে পাবার শপিং কমপ্লেক্স তৈরি হয়, তাহলে তো এটা আমাদের বাংলাদেশবাসীদের জন্য আনন্দের সংবাদ।
আশা করি হেইটার্স, জঙ্গি, রাজাকারদের মুখ এই লেখা বন্ধ করে দিবে।
দেখুন বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ, এটা স্বীকার করলে ফলাফলটা কী দাঁড়ায় - দেশের অবস্থা খারাপ মানে দেশের অধিকাংশ মানুষের অবস্থা খারাপ। এই দায় সরকারের ওপর পড়ে, আবার রাষ্ট্রের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাদের ওপরও পড়ে। আবার অধিকাংশের অবস্থা খারাপ হলেও, যাদের গাড়ির কারনে রাস্তায় জ্যাম হয়, যাদের কারনে প্লেইনে সিট পাওয়া যায় না, তাদের অবস্থা অধিকাংশ মানুষের চেয়ে ভালো। তার মানে খারাপ থাকা মানুষদের প্রতি এই ভালো থাকা মানুষদের একটা দায়িত্ব তৈরি হয়ে যায়। তার চেয়ে বড় কথা দেশের অবস্থা পরিবর্তনে প্রশ্ন তখন চলে আসে। বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ, এটা মানলে এমন কিছু বাস্তবতা ও দায়িত্বের মুখোমুখি আমাদের হতে হয় যা ‘ঝামেলাপূর্ণ’। তাই এগুলো এড়িয়ে যাবার সবচেয়ে ভালো উপায় হল বাংলাদেশ ভালো আছে, এগিয়ে যাচ্ছে – এটা মেনে নেয়া। বাস্তবতার যে ভারশান দিয়ে নিজের বর্তমানকে জায়েজ করা যায় সেটাই বেছে নিন। কোন প্রয়োজন নেই সত্য নিয়ে এতো চিন্তাভাবনার।
When life gives you lemons, make lemonades.
Reject reality and supplant your own.
#Positive_Thinking